নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, সাবধান! দুনিয়া এবং দুনিয়ায় যা কিছু আছে সব কিছু অভিশপ্ত; তবে আল্লাহর জিকির ও আল্লাহর পছন্দনীয় বস্তু এবং ধর্মীয় জ্ঞানে শিক্ষিত শিক্ষার্থী ব্যতিত। [তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং : ২৩২২]
বর্তমানে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা দুই ধারায় বিভক্ত- মাদরাসা শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষা। মাদরাসা শিক্ষার মূল লক্ষ্য হলো ইসলামের ঐতিহ্যগত শিক্ষার সংরক্ষণ ও প্রচার যা মানবজাতির দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের দেশে মাদরাসা শিক্ষার মধ্যে মানুষের জীবনের প্রয়োজনীয় জাগতিক শিক্ষা যা আধুনিক শিক্ষা নামে পরিচিত তা খুবই সামান্য। যার ফলে এ জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া নীতি নৈতিকতায় উৎকর্ষিত এবং কল্যাণকামী আদর্শে গঠিত বিপুল জনগোষ্ঠীর সেবা থেকে দেশ, জাতি ও সমাজের অন্যান্য প্রয়োজনীয় শাখা প্রায় বঞ্চিত।
অপরদিকে, আধুনিক মানসম্মত সাধারণ শিক্ষায় যাবতীয় বৈষয়িক ও জাগতিক জ্ঞানচর্চা অন্তর্ভুক্ত থাকলেও কুরআন, হাদিস, আকাঈদ ও ফিক্বাহ ইত্যাদি ধর্মীয় জ্ঞানচর্চার মৌলিক ও প্রয়োজনীয় বিষয় উপেক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি নৈতিক ও মানবীয় মূল্যবোধ চর্চার চরম অনুপস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে শান্তিময় ইসলামী জীবনব্যবস্থার সৌন্দর্য্যরে প্রতি সম্ভাবনাময় মেধাবী তারুণ্যের বিমুখতা ব্যাপকহারে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তাই এ দুই ধারার শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করে প্রয়োজনীয় ভারসাম্য বজায় রেখে এমন এক সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা দরকার যাতে ইহকাল ও পরকালে সফল হওয়ার উত্তম শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং যার মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে আগামী পৃথিবীতে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো মুসলিম প্রাজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ বের হয়ে আসবে।
এই মহান উদেশ্যকে সামনে রেখেই ধর্মীয় শিক্ষা তথা মাদরাসা শিক্ষা ও জাগতিক শিক্ষার অপুর্ব সমন্বয়ে ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আদ-দ্বোহা ইসলামিক স্কুল যা পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে আদ-দ্বোহা ইনস্টিটিউট অফ ইসলামিক স্কলার্স ও মাদরাসাতুদ দ্বোহা আল ইসলামিয়া নামে নামকরণ করা হয়।
আমরা এই সমন্বিত শিক্ষার মাধ্যমে এমন এক প্রজন্ম গড়ে তুলবো ইন্শাল্লাহ যারা শুধু মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত দ্বীনি আলেমই হবে না বরং তারা হাফেজ, আলেম হওয়ার পাশাপাশি হবে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রীধারী। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মর্যাদার পদে ও স্থানে নিজেদের জায়গা করে নিতে পারবে। একদিকে তারা হবে কুরআনে হাফেজ, আলেম, ইসলামিক স্কলার ও দ্বীনের দাঈ এবং অপরদিকে তারা হতে পারবে আধুনিক ডিগ্রীধারী সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। এভাবেই একজন শিক্ষার্থী যখন নিজেকে ইসলামিক ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারবে তখন একদিকে যেমন তার দুনিয়া ও আখিরাতের ফায়দা হবে অপরদিকে জাতি পাবে একজন সৎ, যোগ্য নাগরিক এবং সমাজের আদর্শ কর্ণধার।
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের এই প্রচেষ্টাকে কামিয়াবী দান করুন-আমিন।